ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে -আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের আড্ডায় বক্তারা

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি ::  বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প বা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তরুণরা যেভাবে এ শিল্পে এগিয়ে আসছেন তা খুবই আশাব্যঞ্জক। আর তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্র একদিন ‘কান’ ও ‘অস্কারে’ জায়গা করে নেবে। ৩০ সেপ্টেম্বর, সোমবার নিউইয়র্কে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আয়োজিত এক আড্ডায় অংশ গস্খহণকারীরা এসব কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের সফরসঙ্গী বাংলাদেশের দুই খ্যাতিমান অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ ও মীর সাব্বির এবং নিউইয়র্ক ভ্রমণে থাকা জিটিভি’র প্রধান বার্তা সম্পাদক ইকবাল করিম নিশানের সঙ্গে এ আড্ডার আয়োজন করা হয়। জ্যাকসন হাইটসের খাবার বাড়ি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত আড্ডায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দেশকন্ঠ সম্পাদক দর্পণ কবীর। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ও সাপ্তাহিক আজকালের নির্বাহী সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর।

বক্তব্যে অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ বলেন, সব শিল্পের মত বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে নানা সমস্যা এবং প্রতিকূলতা রয়েছে। কিন্তু সেই প্রতিকূলতা কাটানোর জন্য সরকার নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। তরুণরা অতীতের চেয়ে এখন অনেক বেশি মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। আমরা আশা করি এই তরুণদের হাত ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র একদিন ‘কান’ বা ‘অস্কারে’ যাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র বা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে অনেক কাজ করছেন। তিনি এ শিল্পকে দরদের চোখে দেখেন। তিনি চলচ্চিত্রের কলাকুশলীদের অন্য যে কোন সরকার প্রধানের চেয়ে অনেক বেশি ভালোবাসেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মায়া করেন। তাঁর মায়ার কারণে আমরা সবখানে ছুঁটে যাই। কারণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্রবান্ধব একজন মানুষ।

অভিনেতা মীর সাব্বির বলেন, বাংলাদেশে অনেক মানসম্মত নাটক তৈরি হচ্ছে। প্রতি ঈদে অন্তত চারশো থেকে পাঁচশ নাটক প্রডিউস হয়। আমাদের নাটকগুলোর ভিউয়ার ইউটিউবে অনেক বেশি। এমনকি কোন কোন নাটকের ভিউয়ার এক কোটির মত। এসব নাটক মান বা বাস্তব সম্মত না হলে মানুষজন দেখতো না। বাংলাদেশের অনেক নাটক ওপার বাংলার মানুষও ভালোভাবে দেখেন, এ কারণে আমরা যখন ওপার বাংলায় যাই তখন তারা আমাদের অটোগ্রাফ নেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সব ধরনের সহযোগিতার নির্দ্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি আমাদের কথা শুনেন, তিনি চলচ্চিত্র শিল্পকে নিয়ে মনের গভীর থেকে ভাবেন।

সাব্বির বলেন, যেখানে অতীতে ব্যবসা ধসের কারণে সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেখানে বর্তমান সরকার দর্শকদের হলমুখি করার উদ্যোগ নিচ্ছে। প্রতিটি জেলায় সিনেপ্লেক্স তৈরির লক্ষে কাজ করছে।

জিটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক ইকবাল করিম নিশান বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়। কিন্তু চ্যানেলগুলো সাবলিম্ব নয়। এ কারণে যোগ্য মানুষকে বা যোগ্য সাংবাদিককে তেমনভাবে মূল্যায়ন করতে পারছে না।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় মাস্টার্স পাস করা একজন ছেলেকে আমরা চাকুরি দিচ্ছি মাসে ৮ হাজার টাকায়। আমরা তার কাছে এ অল্প টাকার বেতন দিয়ে অনেক বেশি কিছু আশা করতে পারছি না। এ জন্য তার কাছ থেকে ভালো কোন বিশেষ প্রতিবেদনও আশা করতে পারি না। এই হলো বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর অবস্থা।

আড্ডায় অংশ নেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী রেখা আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক মনজুর আহমদ, সাপ্তাহিক আজকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশন-জেবিবিএ’র সভাপতি শাহ নেওয়াজ, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি বেলাল আহমেদ, সদস্য শামীম আল আমিন, শো-টাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম, আবৃত্তিশিল্পী গোপন সাহা, প্রেসক্লাবের সদস্য ও সংবাদ পাঠিকা শামসুন নাহার নিম্মি। উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও টাইম টিভির সিইও আবু তাহের, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল লিটন, কার্যকরী সদস্য আবুবকর সিদ্দিকী, কার্যকরী সদস্য শামসুল আলম, সদস্য মঞ্জুরুল হক, শামসুল আলম লিটন, আব্দুল হামিদ, বাংলা চ্যানেলের সিইও শাহ জে চৌধুরী, এস্টোরিয়া ডিজিটালের কর্ণধার নজরুল ইসলাম, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট খাইরুল খোকন প্রমুখ। আড্ডার শুরুতে মাহফুজ আহমেদকে ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে কার্যকরী সদস্য মল্লিকা খান মুনা, মীর সাব্বিরকে ক্লাবের সদস্য সীমা সুস্মিতা এবং ইকবাল করিম নিশানকে ক্লাবের সভাপতি দর্পণ কবীরের কন্যা এথিনা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। রাতের আহারের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

পাঠকের মতামত: